কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ রক্ষায় পর্যটক সীমিত করাসহ নানান পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। আবার একইসঙ্গে দ্বীপের পরিবেশ হুমকির মুখে ফেলে এসব বিধিনিষেধের আড়ালেই তৈরি হচ্ছে বিলাসবহুল ভবন।
জানা গেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাজারের ডানপাশে ডেইলপাড়ায় হোটেল ব্লু মেরিনের পশ্চিম পাশে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এরইমধ্যে দোতলার নির্মাণকাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, ভবনের ভেতরে কাজ চলছে
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের ১৩টি পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) একটি সেন্টমার্টিন। পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষার জন্যই সেন্টমার্টিনে স্থাপনা নির্মাণে কোনো ছাড়পত্র দেয় না পরিবেশ অধিদপ্তর।
অপরদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের আকর্ষণীয় পর্যটন জোন সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক দৃশ্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে দালান-কোঠা ও ছোট-বড় রিসোর্ট নির্মাণ। এ বছর দ্বীপে পর্যটক আসার ক্ষেত্রে নানান বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
সেন্টমার্টিনে নির্মাণাধীন ভবনটির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ তদারকি করছেন রিয়াজ উদ্দিন (২৮) নামের এক যুবক। তিনি জানান, ঢাকার এক ব্যক্তি হোটেলটি নির্মাণ করছেন। ভবনের নাম এখনও ঠিক করা হয়নি। তিন মাস ধরে তিনি নির্মাণকাজ তদারকি করছেন। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি বলেও জানান রিয়াজ
ভবনে কাজ করছেন রাজমিস্ত্রি নুর মোহাম্মদ। তিনি জানান, দুই মাস ধরে তারা ছয়জন শ্রমিক কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত তারা মালিকের দেখা পাননি। তার সঙ্গে শুধু ফোনে কথা হয়। ভবনটিতে অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল আবাসিক হোটেল নির্মাণ করা হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত দ্বীপে অবৈধভাবে নির্মিত রিসোর্টের সংখ্যা ১৯২টি। এরপরও নিয়ম ভেঙে নতুন স্থাপনা তৈরি হচ্ছে।
ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, সেন্টমার্টিন রক্ষার নামে প্রশাসন ও প্রভাবশালীরা ধ্বংসের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। একদিকে স্থাপনা উচ্ছেদের নামে প্রচার চালিয়ে ছোট ছোট ঝুপড়িঘর ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, একই স্থানে বড় বড় ভবন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। গত তিন বছরে এখানে দেড় শতাধিক বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে।
সেন্টমার্টিনে নির্মাণসামগ্রী নেওয়া নিষিদ্ধ।উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো মালামাল সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পারে না। এসব বিষয়ে ইউএনও আরও বলেন, আমি টেকনাফে আসার আগে এগুলো হয়েছে। এখন নতুন করে কোনো ভবন নির্মাণ করার সুযোগ নেই।