সুনামগঞ্জে পর্যটক নেই, ব্যবসায়ীদের হাহাকার

যখন হাওরে পানি ছিল তখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল উত্তাল। ফলে ভরা মৌসুমে ব্যবসা হয়নি। বন্যার পানি চলে গেছে। কমে গেছে হাওরের পানি। এখন ৪ শতাধিক বিলাসবহুল হাউজবোট পড়ে আছে সুরমা নদীর ঘাটে। এতে একদিকে বেকায়দায় পড়েছেন হাউজবোট মালিকরা। অন্যদিকে বেকার হয়েছেন ৬ শতাধিক কর্মচারী।

যদিও শীত মৌসুমে পর্যটক টানতে নানান চেষ্টা করে যাচ্ছেন সুনামগঞ্জের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে তাতে কাজ তেমন হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্ষা ও শীত, দুই মৌসুমে দুই রকমের সৌন্দর্যে অপরূপ হয়ে ওঠে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ও নীলাদ্রি লেক। প্রতি মৌসুমে এ পর্যটন স্পটগুলো যেমন সাজে ভিন্ন রূপে, তেমন প্রতি বেলাতেও এর সাজ একেক রকম। ভোরবেলা হাওর থাকে সুনসান এবং স্নিগ্ধ। কিছুক্ষণ পর হাওর হয়ে ওঠে পাখির কলকালিতে পূর্ণ। দুপুর ও বিকেলে দেখা যায় হাওর ও এর চারপাশের বাসিন্দাদের যাপনচিত্র। আর সূর্য ডোবার সময়ে সম্পূর্ণ হাওর ঢেকে যায় সোনালি রঙের চাদরে। রাতের ঝকঝকে আকাশে মিটমিট করে চাঁদের আলো। সৌন্দর্যের এই আমেজে মেতে ওঠেন দূর-দূরান্ত থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকরা।

সুনামগঞ্জে পর্যটক নেই, ব্যবসায়ীদের হাহাকার

 

টাঙ্গুয়ার হাওর, নীলাদ্রী লেক, লাকমা ছড়া, বারিকাটিলা, যাদুকাটা নদী, শিমুলবাগান, নীল ঝরনাসহ পর্যটন স্পটগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বছরে বছরে সুনামগঞ্জে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও চলতি বছর তিন দফা বন্যা ও দেশের অস্থিতীশীল পরিবেশের কারণে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে এ জেলা। ফলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক কিংবা দেশ শান্ত হওয়ার পর শত চেষ্টা করেও পর্যটকের দেখা মেলেনি ভরা মৌসুমে।

সুনামগঞ্জে পর্যটক নেই, ব্যবসায়ীদের হাহাকার

 

পর্যটন ব্যবসায়ী অমিত ও আরফাত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, তিন দফা বন্যা ও দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে চলতি বছর সুনামগঞ্জে পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে। তবে শীত মৌসুমে যাতে জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকরা আসেন, সে জন্য আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

চণ্ডীমঙ্গল হাউজবোটের মালিক অমিত রায় জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর বন্যা ও দেশের পরিস্থিতি খারাপের কারণে সুনামগঞ্জে তেমন একটা পর্যটকদের আগমন হয়নি। যার ফলে আমরা হাউজবোট যারা নতুন করেছি তাদের লোকসান দিতে হয়েছে। পাশাপাশি এবার শুকনো মৌসুমেও পর্যটকের সংখ্যা কম।

 

সুনামগঞ্জে পর্যটক নেই, ব্যবসায়ীদের হাহাকার

বজরা হাউজবোটের মালিক দিগন্ত জাগো নিউজকে বলেন, সুনামগঞ্জের পর্যটন শিল্পে যেমন ব্যবসা হওয়ার কথা তেমন হয়নি। শীত মৌসুমেও কিন্তু সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে অনেক সুন্দর। পর্যটকরা চাইলেই আসতে পারেন।

বেসরকারি বিমান ও পর্যটন শিল্প সচিব নাসরিন জাহান জাগো নিউজকে বলেন, দেশের যে স্থানগুলোতে টুরিস্টরা যাচ্ছেন সেগুলো কীভাবে আরও আর্কষণীয় করা যায় আমরা সামগ্রিকভাবে সে চেষ্টা করছি। চলতি বছর তিন দফা বন্যা ও দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে সুনামগঞ্জে পর্যটন খাতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

 

হাসজবোট মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য বছর এসময়ে অতিথি পাখি ও সীমান্তবর্তী এলাকার নীলাদ্রি লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা এলেও এ বছর তেমন পর্যটকের দেখা মেলেনি এ জেলায়।